৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| ২১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৯শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি| রাত ১:৪৮| হেমন্তকাল|
শিরোনাম:
বেলাবোতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিবাহ করতে গিয়ে বর কারাগারে আসন্ন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি ১১-২০ গ্রেড নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বেলাবতে বিএনপির ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে গণ মিছিল অনুষ্ঠিত বেলাবোতে মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত বেলাবতে সোনাকান্দা দারুলহুদা দরবার শরীফের পীর সাহেবের আগমন উপলক্ষে আলোচনা সভা ডাকসু নির্বাচনে পাঠকক্ষ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বেলাবোরের শাহরুখ খাঁন চার ইউনিয়নকে বেলাবতে সংযুক্ত করার খবরে বিক্ষোভে উত্তাল রায়পুরা বেলাবতে আলাদা সংসদীয় আসনের দাবিতে মানববন্ধন বেলাবতে বাইসাইকেল, সেলাই মেশিন ও স্যানাটারী প্যাড বিতরণ বেলাবোতে এসিল্যান্ডের বদলি জনিত কারণে বিদায় সংবর্ধনা

স্মার্ট ওয়াচ: সুবিধা ও অসুবিধা

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৮, ২০২৩,
  • 306 Time View

 

ড. প্রিয়দর্শী মজুমদার ও অধ্যাপক সন্দীপ দে:
এনালগ ও ডিজিটাল হাত ঘড়ি এবং স্মার্ট ফোনের যুগ পেরিয়ে চলে এলাম স্মার্ট ওয়াচের দুনিয়ায়। এ তো আর শুধু ঘড়ি নয় বরং এর বহুমুখী প্রয়োগের জন্য একে অনায়াসেই কার্টুনের দুনিয়ার ডোরেমনের চতুর্মাত্রিক পকেটের সাথে তুলনা করা চলে, যেখান থেকে একের পর এক গ্যাজেট বেরিয়ে আসতেই থাকে। স্মার্ট ফোনের বহুমাত্রিক প্রয়োগ ক্যালকুলেটর, কম্পিউটার, টর্চ, ক্যালেন্ডার, ডায়রি থেকে শুরু করে স্টিল ও ভিডিও ক্যামেরা, মিউজিক সিস্টেম, টিভি, সাধারণ ঘড়ি, খেলাধুলায় বা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় বহুল ব্যবহৃত স্টপ ওয়াচ, আপনার যাবতীয় ব্যাঙ্কিং-এর সুবিধা ও হিসাবপত্র এই সমস্ত কিছুকেই এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেছে। স্মার্ট ওয়াচের প্রয়োগ আরো কিছুটা বেশি।
মোবাইল বা কম্পিউটারের সব ধরণের কাজ ছাড়াও স্মার্ট ওয়াচের আরো একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ হলো নিরন্তর বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্যারামিটারগুলি মনিটর করা। শরীরের কোন কোন প্যারামিটার মাপা যায় এই গ্যাজেটে? আসুন একটু দেখে নেই। রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন, নাড়ির গতি, শরীরের তাপমাত্রা এগুলো তো আছেই, সাথে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা, শর্করার পরিমান, আপনার শারীরিক সক্ষমতা, নিঃশ্বাস প্রশ্বাস-এর গতি, এমনকি অত্যাধুনিক স্মার্ট ওয়াচের সাহায্যে ই.সি.জি. ও করে ফেলা যায়, মানে এক কথায় স্মার্ট ওয়াচ পরে আপনি ঘুরছেন মানে আপনি একটা পকেট সাইজের মেডিকেল ডায়াগনোস্টিক সেন্টার বা আই.সি.ইউ. সাথে নিয়েই চলছেন। আপনার ক্ষেত্রে শারীরবৃত্তীয় প্যারামিটারগুলোর স্বাভাবিক যা ভ্যালু তার থেকে সামান্য নড়চড় হয়েছে কি হয়নি, সাথে সাথেই স্মার্ট ওয়াচ আপনাকে অ্যালার্ম দেবে। ঘুমন্ত অবস্থায় আপনার শরীরের সমস্ত প্যারামিটার মেপে, আপনার স্বাভাবিক ঘুম হচ্ছে কিনা সেটাও এই গ্যাজেট আপনাকে জানিয়ে দিতে পারে। দিনে কতটা আপনি হাঁটছেন বা কত ক্যালোরি খরচ করছেন সব কিছুরই হিসাব রাখে এই গ্যাজেট। এক কথায় বলতে গেলে বায়ো-মেডিকেল সেক্টরে বিপ্লব এনে দিয়েছে অবিশ্বাস্য ক্ষমতা সম্পন্ন এই ইলেকট্রনিক প্ৰয়োগটি। স্মার্ট ওয়াচের বায়ো-মেডিকেল সমস্ত প্রয়োগের মূলেই কিন্তু ইলেকট্রনিক সেন্সর এর খেলা। বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় ভৌতরাশি যেমন শরীরের তাপমাত্রা, রক্তচাপের্ মান, রক্তে শর্করার পরিমান এগুলিকে সরাসরি ইলেকট্রনিক রাশিতে (বিভবপ্রভেদ) পরিবর্তন করা হয়, এই কাজটি যে করে তার পোশাকি নাম ইলেকট্রনিক সেন্সর। বস্তুত শারীরবৃত্তীয় প্যারামিটারগুলির সাথে ইলেক্ট্রনিক্সের মেলবন্ধনের কাজটি করে এই সেন্সর। সেন্সর আসলে একটি বিশেষ ধরণের ট্রান্সডিউসার। আমরা স্কুলে পড়েছি শক্তির বিনাশ বা সৃষ্টি করা যায় না, শুধু এক রূপ থেকে অন্য রূপে পরিবর্তন করা যায়, সেই কাজটিই করে এই ট্রান্সডিউসার। যে ট্রান্সডিউসার অন্য শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে বা ভোল্টেজে রূপান্তরিত করে সেগুলিই হলো সেন্সর। যতক্ষন পর্যন্ত স্মার্ট ওয়াচটি আপনার শরীর সংলগ্ন থাকবে এবং এর মধ্যের ব্যাটারী কর্মক্ষম থাকবে ততক্ষনই ও নিজের কাজ করে চলবে।

আলাদিনের আশ্চর্য্য প্রদীপের মতো স্মার্ট ওয়াচের ভুরি ভুরি বহুমাত্রিক প্রয়োগ সম্পর্কে তো অনেকটাই আলোচনা হলো। এবার আসুন একটু দেখে নেই প্রদীপের তলায় কোনো অন্ধকারও আছে কিনা।
স্মার্ট ওয়াচ এমন একটি ইলেকট্রনিক গ্যাজেট যা সবসময় হাতে পরে না থাকলে আপনি তার থেকে কোনো বায়ো-মেডিকেল পরিষেবা পাবেন না (অন্য পরিষেবাগুলি এক্ষেত্রে অবশ্যই পাবেন)। একথা সহজেই অনুমেয় যে শরীরের সাথে সংলগ্ন থাকে বলেই এই গ্যাজেটটি সেন্সর প্রযুক্তির সাহায্যে বিবিধ শারীরবৃত্তীয় রাশিগুলি পরিমাপ করতে পারে। এখন এই পদ্ধতির মধ্যে তো কোনো ম্যাজিক নেই, পুরোটাই বিজ্ঞান-নির্ভর, তাই যেকোনো ওষুধেরই যেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে এই গ্যাজেটের ও তা থাকবে। এই গ্যাজেট থেকে নির্গত তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণের কারণে বিরক্তি, মেজাজ হারানো, ধৈর্যের অভাব, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার মতো মানসিক ব্যাধি থেকে শুরু করে মাথা ধরা, বমি বমি ভাব, অনিদ্রা এবং আরো নানা ধরণের জটিল শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাহলে কি ঠিক করলেন? স্মার্ট ওয়াচ পরে আধুনিকতাকে আপন করে নেবেন নাকি শারীরিক সমস্যা হতে পারে সেটা ভেবে পিছিয়ে যাবেন? যারা দোটানার মধ্যে আছেন তাদের জন্য জানিয়ে রাখি, এমন উদাহরণ আছে যেখানে এই গ্যাজেট মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। কিভাবে? আপনার শারীরবৃত্তীয় রাশিগুলি অনবরত পরিমাপের সময় যখনই তথ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যাবে (যেমন অনিয়মিত হৃদস্পন্দন অথবা রক্তে অক্সিজেন হঠাৎ কমে যাওয়া) সাথে সাথে আপনি এই গ্যাজেট থেকে প্রয়োজনীয় সংকেত পাবেন সেটা আগেই বলেছি এবং সেই মতো ব্যবস্থা নিতে পারবেন। আবার শারীরিক ক্ষতির দিকগুলোকে গুরুত্ব না দিয়েও এটা বলা যায় যে সারাক্ষন ধরে মেডিকেল এক্সামিনেশন-এর মধ্যে থাকাটাও অনেক ক্ষেত্রেই মানসিক অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এই গ্যাজেট ব্যবহার অব্যবহারের সিদ্ধান্ত আপনারই হাতে।

লেখকদ্বয় উভয়ই কলকাতার বারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ইলেকট্রনিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category